ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন। পেশায় ছিলেন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বিভিন্ন দোকানে খা...
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন। পেশায় ছিলেন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বিভিন্ন দোকানে খাতা, কলমসহ স্টেশনারি মালামাল পাইকারি দরে বিক্রি করতেন। তার সেই ব্যবসা এখন বন্ধ হয়ে গেছে জটিল রোগের কারনে ।শুধু তাই নয়, তিনি তার হাত দিয়ে কিছুই ধরতে পারেন না । এমনকি নিজের তিন সন্তানকেও ছুঁয়ে আদর করতে পারেন না। নুরুল আমিন বর্তমানে অসহ্য এক যন্ত্রণায় দিন যাপন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজঘর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ৪ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নুরুল আমিন সবার ছোট। তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে সুখে-শান্তিতেই বসবাস করছিলেন নুরুল আমিন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি হঠাৎঅসুস্থ হয়ে পড়েন নুরুল আমিন। মাত্র দুই তিন-দিনের ব্যবধানে নুরুল আমিনের দুই হাতের ৮টি আঙুল পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। দুই হাতের আঙুলে সংঘর্ষ হলে ঠুকঠক শব্দ হয়। শুধু দুই হাতের বুড়ো আঙুলগুলো বাকি রয়েছে।
এই অবস্থায় রাজধানীর ব্ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান তিনি। সেখানে রিউমাটোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. মো. আবু শাহীনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন নুরুল আমিন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার এই রোগটির নাম রিউমাটয়েট আর্থাইসিস ভাস্যকুলাইটিস। তার আক্রান্ত হওয়া ৮টি আঙুল কেটে ফেলতে হবে। এর চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি।
নুরুল আমিন বলেন, আঙুলগুলো পাথর হয়ে যাওয়ার পর যেন চুলার আগুনের মতো জ্বলছে। ঢাকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ৬টি কোর্সে চিকিৎসা করার পর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কবে আঙুলগুলো কাটবেন। কাটতেই হবে সেটা নিশ্চিত। এরমধ্যে মাত্র দুইটি কোর্স করেছি। এখন আমার কাজ কর্ম বন্ধ, কিভাবে এই চিকিৎসা খরচ চালাবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, হাত থাকার পরও নিজে ভাত মুখে তুলে খেতে পারি না। তিন মেয়ের মধ্যে একটির বয়স মাত্র দেড় মাসে ।আমি মেয়েদের হাত দিয়ে স্পর্শ করে আদর করতে পারি না।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ফাইজুর রহমান ফয়েজ জানান, নুরুল আমিনের রোগটির নাম রিউমাটয়েট আর্থাইসিস ভাস্যকুলাইটিস। খুবই কম রোগীর এই রোগটি হয়। এরফলে রক্তনালিতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। রগগুলো একেবারে শুকিয়ে যায়। এই রোগীর চিকিৎসক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেই। তবে আমাদের কাছে এলে যথাসম্ভব সহায়তা করার চেষ্টা করবো।
নুরুল আমিনের স্ত্রী সাহিদা বেগম জানান, স্বামীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন তারা। ভিটে-বাড়ি অবশিষ্ট আছে। স্বামীর চিকিৎসার জন্য সরকার এবং বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।
নুরুল আমিনের চিকিৎসায় সাহায্য পাঠানোর জন্য এই নম্বরে ০১৭৩২২০৪১৩০ যোগাযোগ করা যাবে।